দেশজুড়ে কৃষক বিদ্রোহের মধ্যেই বিতর্কিত ৩ কৃষি বিলে সই করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রবিবার রাষ্ট্রপতি কৃষি বিলগুলিকে সিলমোহর দিতেই এগুলি আইনে পরিণত হল আজ থেকে। যদিও বিরোধী দল গুলো এই বিল নিয়ে লাগাতার সরকারের বিরোধিতা করে চলেছে।তাছাড়া বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি তীব্র বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছেন কৃষকরাও।
কৃষি বিল নিয়ে বিরোধিতার জেরে সোমবার সকালে দিল্লির রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন কংগ্রেস নেতারা। বিক্ষোভের সময় কংগ্রেসের কর্মীরা ইন্ডিয়া গেটের সামনে একটি ট্রাক্টরে আগুন লাগিয়ে দেন। কৃষি বিলর বিরোধিতার জন্য সোমবার সকালে কংগ্রেস কর্মীদের একটি দল ট্রাক্টরে চেপে ইন্ডিয়া গেটের সামনে আসে। তার পর কিছুক্ষণ বিক্ষোভ, স্লোগানের পরই সেই ট্রাক্টরে আগুন লাগিয়ে দেন তাঁরা। দিল্লির রাজপথে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে ট্রাক্টর।তারপর ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় ট্রাফিক পুলিস ও দমকল বাহিনী।দমকল বাহিনীর দ্রুত প্রচেষ্টায় আগুন নেভানো হয়।ইতিমধ্যে দিল্লি পুলিস জানিয়েছে, এই মামলায় পুলিস তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ট্র্যাক্টরে আগুন লাগিয়েছেন যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দিল্লি পুলিস।
প্রসঙ্গত, কৃষি বিল নিয়ে বিরোধিতায় শনিবারই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবির ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে অকালি দল।দলের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয় যে, ‘কৃষি বিলে কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাওয়ার বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। বারংবার এ বিষয়ে সংশোধনের কথা বলা হলেও বিজেপি এখনও তা করেনি। তারা অনড়। এতে কৃষিপণ্যের দামের নিয়ন্ত্রণ পুঁজিপতিদের হাতে চলে যাবে। ফলে ইচ্ছামতো দামে কৃষকদের থেকে ফসল কিনবে তারা। তাছাড়া পাঞ্জাব ও শিখদের নিয়ে নানান ইস্যুতে অকালি দলের সঙ্গে এনডিএ-র মতবিরোধ ছিল। একাধিকবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার পাঞ্জাবি ভাষাকে জম্মু ও কাশ্মীরের সরকারি ভাষার মর্যাদা দিতে রাজি হয়নি। তাই জোট বেরিয়ে আসতে হচ্ছে।’
তাছাড়া, রবিবার মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিলগুলির সপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজন মেনেই এই সংস্কারগুলি করা হয়েছে। কৃষকদের ভয় দূর করতে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, বিলগুলি কৃষক বা কৃষিমান্ডির বিরুদ্ধে নয়। বিলগুলি কৃষকদের অবাধ ক্ষমতা দেবে।তিনি আরও বলেন যে এই বিল নিয়ে এক শ্রেণির তরফে ভুল বোঝানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সহায়ক মূল্যের কোনও সংস্থান নেই বিলে। তা একদম ভুল। কৃষকরা চাইলে সহায়ক মূল্যেও পণ্য বিক্রির সুবিধা রয়েছে এই বিলে।
তবে,দেশের অভ্যন্তরে চাষীদের যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে তা এত সহজে নেভানো যাবে না বলে আন্দাজ করাই যায়।